Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

অফিস সম্পর্কিত

হাজতি ও কয়েদি হিসেবে কারাগারে বন্দীরা আসে। ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে এদেরকে সিভিল বন্দী, বিচারাধীন বন্দী, মহিলা বন্দী, ২১ বছর নিম্ন বয়সের পুরুষ বন্দী, ষাটোর্ধ্ব বন্দী, বয়ঃসন্ধিতে উপনীত না হওয়া পুরুষ বন্দী এবং অন্যান্য সাজাপ্রাপ্ত পুরুষ বন্দী - এমন সুবিধাজনক বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়। যে সব বন্দীর বিচারকার্য শেষ হয়নি বা নির্ধারিত তারিখে যাদের আদালতের সম্মুখে হাজির করা হয় তারা হাজতি বন্দী হিসেবে পরিচিত। আর বিচার শেষে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে যারা কারাগারে আটক থাকে তারা কয়েদি বন্দী। সশ্রম কয়েদি বন্দীদেরকে কারাগারের নির্ধারিত বন্দী পোশাক পরতে হয়। শারীরিক যোগ্যতা ও পূর্ব অভিজ্ঞতা বিবেচনায় সশ্রম কয়েদিরা, এবং আবেদনের প্রেক্ষিতে ৬ মাস বা তদূর্ধ সময়ের জন‍্য সাজাপ্রাপ্ত বিনাশ্রম বন্দীরা বিভিন্ন কাজ করে। এসব কাজের মধ্যে ওয়ার্ড পরিচালনা, বন্দীদের পাহারা, কারা হাসপাতালের রাইটার, পত্র লেখক, রান্না, পানি সরবরাহ, ধোপা, বই বাঁধাই, নাপিত, সুইপার, উৎপাদন বিভাগের বিভিন্ন ট্রেড অর্থাৎ কাঠ, বেত, বাঁশ, তাঁত, মোড়া, সেলাই, কামার ইত্যাদি। হাজতি বন্দীদের সাধারণত কোনো কাজ করানো হয় না।

কারাগারে বন্দীদের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ৩ বার খাবার দেওয়া হয়। সকালের নাস্তায় গুড় ও রুটি, দুপুর ও রাতের খাবারে ভাতের সাথে মাংস বা মাছ, সবজি বা ডাল দেওয়া হয়। অপেক্ষাকৃত মর্যাদা সম্পন্ন অর্থাৎ ১ম ও ২য় শ্রেণির বন্দীরা সাধারণ শ্রেণির বন্দী হতে মানসম্পন্ন খাবার পেয়ে থাকে। তবে জেল হাসপাতালের রোগীদের রোগের ধরন অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হয়।

বন্দীদের বিনোদনের জন্য প্রতিটি জেল খানায় ইনডোর ও আউটডোর  খেলাধুলার ব্যবস্থা আছে এবং প্রতিটি কারাগারের বন্দী ব্যারাকে টেলিভিশন দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। জেলখানায় বন্দীদের চিকিৎসার জন্য প্রেষণে ডাক্তার এবং স্থায়ীভাবে ফার্মাসিস্ট, জেল নার্স দায়িত্ব পালন করে থাকে। দেশের প্রতিটি জেলখানায় বন্দীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল রয়েছে। সেখানে বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি জেলখানায় লাইব্রেরি রয়েছে। কারা প্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ নিজেদের বিভিন্ন অভিযোগ বা অসুবিধার কথা দরবার পদ্ধতির মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের নিকট তুলে ধরেন।

আদিতে মানুষকে শাস্তি প্রদান ছিল কারাগার সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য, বর্তমানে কারাগার শাস্তি প্রদান ছাড়াও অপরাধীদের সংশোধনাগার হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। বন্দীদের পুনর্বাসন ও সমাজে প্রতিষ্ঠা পাবার লক্ষে‍্য প্রতিটি জেলখানায় প্রেষণামূলক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু আছে। এ প্রশিক্ষণের আওতায় মহিলা বন্দীদের কাঁথা সেলাই, কাগজের প্যাকেট, খাম তৈরি, বাজারের ব্যাগ তৈরি, টেইলারিং ও সূচিশৈলী শিক্ষা দেওয়া হয়। পুরুষ বন্দীরা ব্যানার বা সাইনবোর্ড লিখন, মৎস্য চাষ, কাগজের প্যাকেট তৈরি, ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি মেরামত বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয়। নিরক্ষর বন্দীদের গণশিক্ষার মাধ্যমে অক্ষর জ্ঞান এবং কারাগার মসজিদের ইমামের মাধ্যমে বন্দীদের ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয়। কারা প্রশিক্ষক ও শিক্ষিত বন্দীদের স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বন্দীদের মাঝে এসব কার্যক্রম চালু আছে।

কারাগারে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় কারারক্ষীগণ দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এ উপমহাদেশে ১৭৮৮ সালে খাকি রংয়ের হাফ শার্ট, হাফ প্যান্ট পরে কোমরে চামড়ার বেল্ট, পায়ে পট্টি পেঁচিয়ে হাতে বল্লম ও মাথায় পাগড়ি দিয়ে কারারক্ষীগণ দায়িত্ব পালন করত। পরবর্তীকালে কালো ক্যাপ, ফুল হাতা খাকি শার্ট, ফুল প্যান্ট, ওয়েব বেল্ট, বুট পরে ৩০৩ রাইফেল নিয়ে কারারক্ষীরা দায়িত্ব পালন করতে থাকে। বর্তমানে ডীপ-গ্রিন রংয়ের পোশাক পরে দায়িত্ব পালন করছে।